স্ত্রী স্বামীর কথা না শুনলে করণী কি যেনে নিন

স্ত্রী স্বামীর কথা না শুনলে করণিয় কি এই বিষয় গুলো নিয়ে আজকে আপনাদের সাথে সেয়ার করবো,কিভাবে স্ত্রীরক শাসন করবেন জানতে এই পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পরেন ১০০% আপনার বিবাহিত জিবনে অনেক উপকারে আসবে।  

স্ত্রী-স্বামীর-কথা-না-শুনলে

স্ত্রী যদি স্বামীর অবাধ্য হয়ে যায়,স্বামীর অধিকারের প্রতি অবহেলিত হয়ে পড়ে, স্বামীর আনুগত্যের ব্যাপারে শৈথিল প্রদর্শন করে তাহলে সেই স্ত্রীকে সংশোধনের জন্য স্বামীকে যথাক্রমে পাঁচটি উপায় এর কথা বলে দেওয়া হয়েছে।

পোস্টসূচীপত্র:স্ত্রী স্বামীর কথা না শুনলে করণী কি যেনে নিন

স্ত্রীকে সংশোধনের উপায়

প্রথম পর্যায়ে ধৈর্য ধারণ করা।দ্বিতীয় পর্যায়ে স্ত্রীকে বুঝিয়ে শুনিয়ে,উপদেশ দিয়ে সংশোধন করার চেষ্টা করা।তাতেও যদি কোন কাজ না হয় তাহলে তৃতীয় পর্যায়ে স্ত্রীকে সতর্ক করার জন্য,স্ত্রীর হতে ভিন্ন বিছানায় শয়ন করা।বিছানা পরিবর্তন না করতে পারলে একই বিছানায় থেকেও বিছানার ভিন্ন দিকে পাশ ফিরিয়ে শুয়ে থাকা।

আরো পড়ুন : রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো যেনে নিন

তৃতীয় পর্যায়েও যদি কোন কাজ না হয় তাহলে ইসলামে সাবধান করার জন্য হালকা মারধর করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ,এমন ভাবে মারধর করা যাতে তার শরীরে মারধরের কোন প্রতিক্রিয়া বা জখম না হয়।

উপরিয়ক্ত চারটি পর্যায় গ্রহণ করার পরেও যদি স্ত্রী নিজেকে সংশোধন না করে স্বামীর অবাধ্য হয় এবং মনোমালিন্য ও বিবাদ দীর্ঘায়িত হয়ে যায়-হোক তা স্ত্রীর স্বভাবের জটিলতা বা অবাধ্যতার কারণে,বা পুরুষের অহেতুক কড়াকড়ির কারণ;তাহলে এই পর্যায়ে সরকার বা উভয় পক্ষের মুরব্বী,অভিভাবক 

কিংবা মুসলমানদের কোন শক্তিশালী সংস্থা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আপোষ করে দেয়ার জন্য দুজ’ন সালিস নির্ধারণ করে দিবেন।একজন স্ত্রীর পরিবার থেকে আর একজন পুরুষের পরিবার থেকে।তারা যদি আন্তরিকতার সাথে সৎ নিয়তে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি ও সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী হয়ে কাজ করেন,তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাদের কাজে সহায়তা দান করবেন এবং স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সদ্ভাব সৃষ্টি করে দিবেন।

স্ত্রীকে শাসন করার পদ্ধতি

হাদিছের বর্ণনা অনুযায়ী নারীগণ সাধারণত বক্র সভাবের হয়ে থাকে।তাদেরকে তাদের মত ছেড়ে দিলে সারা জীবন বক্রই থেকে যাবে।আবার অতিরিক্ত করা শাসন পূর্বক সোজা করতে চাইলে ভেঙে যেতে পারে।তাই নারীদেরকে শাসনও করতে হবে এবং শাসনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পথ অবলম্বন করতে হবে।নারীদের সর্বদা সংশোধনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, তবে এর ফলে নারীরা সম্পূর্ণরূপে সংশোধন হবে-এমন আশা রাখা যায় না।

আরো পড়ুন : শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল যেনে নিন

স্ত্রী অবাধ্য হলে বা যথাযথ আনুগত্য প্রকাশ না করলে তাকে সংশোধনের জন্য উপরে আলোচিত বিষয় গুলোর ধারা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থাৎ,সর্বপ্রথম তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এবং উপদেশ দিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে।প্রথম উদ্যোগ ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় উদ্যোগে বিছানা ত্যাগ করতে হবে। 

দ্বিতীয় উদ্যোগেও ব্যর্থ হলে তৃতীয় পদক্ষেপে স্ত্রীকে হালকা মারধর করেও সংশোধন করে নেয়া যেতে পারে।অনেক মুফাসসিরের মতে এই তিনটি পন্থার মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব।অর্থাৎ,কেউ যদি বোঝানো বা উপদেশ দেওয়ার পূর্বেই বিছানা ত্যাগ করে তাহলে তা জায়েজ হবে না।অথবা বোঝানো ও বিছানা ত্যাগ করার পূর্বেই স্ত্রীকে মারধর করে সংশোধন করার পন্থা অবলম্বন করা যাবে না,কারণ তা বৈধ নয়।

স্ত্রীকে মারধর করার ব্যাপারে যে অনুমতি দেয়া হয়েছে সে ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে,এই মারধর অর্থ নির্যাতন করা নয়,স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া নয়, তাকে লাঞ্চিত করা নয় বরং তার আত্মমর্যাদায় আঘাত দিয়ে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। এজন্য ফোকাহায়ে কেরাম শর্ত করেছেন,শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এমন ভাবে মারা যাবে না, চেহারায় মারা যাবে না। কোন কোন মুফাসসির বলেছেন

একই স্থানে একাধিক বার আঘাত করা যাবে না এবং কোন কোন মুফাসসির এও বলেছেন যে,মারবে রুমাল বা কাপড় পেঁচিয়ে তা দ্বারা নয়তো মেসওয়াক দ্বারা।তদুপরি এই যতটুকু মারধর করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তা-ও সকল ক্ষেত্রে নয় বরং ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন,সাধারণত চারটি কারণে মারা যেতে পারে।

প্রথম কারণ-স্বামী যৌন চাহিদা পূরণ করতে আহবান জানালে স্ত্রী তাতে অমান্য করলে।দ্বিতীয় কারণ-স্ত্রী শরীআতসম্মত ওজর ছাড়া স্বামীর বিনা অনুমতিতে বাড়ি থেকে বের হলে।তৃতীয় কারণ-স্বামীর বলা সত্বেও যদি স্ত্রী সাজসজ্জা বা রূপচর্চা না করে।চতুর্থ কারণ-শরীআতের ফরজ কাজ পরিত্যাগ করলে।যেমন: নামাজ না পড়লে,ফরজ গোসল না করলে,কোন ওজর ছাড়াও রোজা না রাখলে ইত্যাদি।

সর্বোপরি কথা এই যে-মারধর করার অনুমতি থাকলেও সেটা পছন্দনীয় পন্থা নয়।হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পর্যায়ের শাস্তি দান কে পছন্দ করেননি বরং তিনি বলেছেন ভালো লোকেরা এমন করে না।

আরো পড়ুন : যাকাত দেওয়ার নিয়ম এবং যাকাতের মাসায়েল যেনে নিন

স্ত্রীকে শাসন ও সংশোধন করার জন্য বকাঝকা,গালমন্দ বা মারধর করার ক্ষেত্রে অনেক সময় স্বামীরা রাগের বসে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং বাড়াবাড়ি করে ফেলেন। যার ফলে একদিকে শাসনের ফায়দা নষ্ট হয় এবং অন্যদিকে নিজের বাড়াবাড়ির জন্য নিজেকেই লজ্জিত হতে হয়।এ থেকে বাঁচার উপায় তিনটি।

  • প্রথম উপায়-যখন রাগ উঠবে,সেই মুহূর্তে কোন কিছু বলা বা করা যাবে না।
  • দ্বিতীয় উপায়-কোন কোন শব্দ বলে স্ত্রীকে গালমন্দ করতে হবে কিংবা কিভাবে কোন সকল স্থানে কতটুকু প্রহার করতে হবে তা আগে থেকেই চিন্তা ভাবনা করে নিতে হবে।
  • তৃতীয় উপায়-গালমন্দ বা প্রহার করার পূর্বে সকল পরিস্থিতি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে নিতে হবে যেন পরবর্তীতে স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হয়ে কিছু করতে গেলে যেন লজ্জিত না হতে হয়।এই তিনটি পন্থা অবলম্বন করলে শাসনের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

লেখক এর মতামত

স্ত্রী স্বামীর কথা না শুনলে স্ত্রীকে শাসন করার ক্ষেত্রে স্বামীকে মনে রাখতে হবে যে সে শাসক নয় আর স্ত্রী শাসিত নয়।স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে শাসক ও শাসিতের সম্পর্ক নয় বরং তাদের মধ্যের সম্পর্ক হল ভালোবাসার সম্পর্ক,প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক।অতএব কোন শাসনই যেন ভালোবাসার চেতনা বাদ দিয়ে নিছক রাগ ও ক্ষোভ চরিতার্থ করার জন্য না হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url