ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি যেনে নিন
ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি আমরা যারা মুসলিম আমাদের সকলেরই ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো জানা থাকা প্রয়োজন।আজকে আমি আপনাদের সাথে ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো জানতে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।১০০% নিশ্চিত আপনি ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা পাবেন।ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি এগুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
পোস্টসূচীপত্র:ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি যেনে নিন
ওযু মধ্যে যা যা করতে হয় তা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো:
- ওয়াক্ত আসার পূর্বেই ওযু সামান প্রস্তুত থাকা উত্তম।
- মা’যূর না হলে তার জন্য ওয়াক্ত আসার পূর্বে ওযু করে নেয়া উত্তম।
- ওযুর পূর্বে পেশাব পায়খানার হাজত থেকে ফারেগ হয়ে নেওয়া উত্তম।
- উঁচু স্থানে বসে ওযু করা আদব।
- পবিত্র স্থানে ওযু করা।
- কেবলামুখী হয়ে ওযু করা আদব।
- পানি ঢেলে নিতে হয়-পানির পাত্রটা এমন হলে সে পাত্রটা বামদিকে রাখা আর পানি হাত দিয়ে তুলে নিতে হয়-এমন পাত্র হলে সেটা ডান দিকে রাখা আদব।
- প্রথমে ওযুর নিয়ত করবে। নাপাকী দূর করার কিংবা পবিত্রতা অর্জন করার বা নামাজ জায়েজ হওয়ার অথবা আল্লাহর নৈকট অর্জন করার নিয়ত করবে। নিয়ত করা সুন্নাত। মনের ইরাদা ও ইচ্ছাকে বলা হয় নিয়ত।
- নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে যাদের খটকা থেকে যায়, তারা নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতে পারেন।
- নিয়ত মুখে উচ্চারণ করলে আরবিতে করা যায়।আরবীতে করা ফরজ ওয়াজিব নয়,মুস্তাহাবও নয়। বাংলায় নিয়ত করতে চাইলে এভাবে করা যায়-
বাংলা অর্থ:আমি নাপাকি দূর করার, নামাজ বৈধ করার এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার নিয়তে উযু করছি।
আরো পড়ুন : শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল যেনে নিন
নিয়ত করার পর এই দোয়া পড়া মুস্তাহাব।এই দোয়া পড়ে অজু শুরু করবে, তাহলে ফেরেশতাগণ এই ওযু ভাঙ্গার পূর্ব পর্যন্ত নেকি লিখতে থাকবে।
“বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি”
বাংলা অর্থ:মহান আল্লাহর নামে আরম্ভ
করছি এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য তিনি আমাকে দ্বীন ইসলামের উপর রেখেছেন
এজন্য।
- কোন ওজর না থাকলে ওযুর মধ্যে অঙ্গ মর্দন করে দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যের সহযোগিতা গ্রহণ না করাই আদব। কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় পানি তুলে দিলে বা পানি ঢেলে দিলেও কোন দোষ নাই।
- তারপর হাতের কব্জি ধোয়ার দোআ পড়বে। উল্লিখিত যে, ওযুর অঙ্গগুলো ধোয়া বা মাসেহ যেসব দোআ বর্ণিত হয়েছে তা সহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। অতএব এগুলো পড়াকে সুন্নাত মনে করা যাবে না। তবে বুযুর্গানে দিন এগুলো পাঠ করেছেন এবং করেন। তদুপরি এ দুআগুলোর অর্থ ভাল,এই হিসাবে এগুলো পাঠ করাকে মুস্তাহাব বা উত্তম বলা হয়।
বিসমিল্লাহ সহ হাতের কব্জি ধোয়ার দুআটি এভাবে পড়া যায়-
“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল ইয়ুমনা ওয়াল বারাকাতা ওয়া আউযুবিকা মিনাস্সুউমি ওয়াল মালাকাতি”বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট মঙ্গল ও বরকত কামনা করি এবং অমঙ্গল ও ধ্বংস থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই।
- তারপর উভয় হাতের কব্জি ধৌত করবে।তিনবার ধৌত করা সুন্নাত।
- মেসওয়াক করা সুন্নাত।মেসওয়াক উযু শুরু করার পূর্বেও করা যায়।মেসওয়াক না থাকলে কিংবা মুখে ওজর থাকলে বা দাঁত না থাকলে আঙ্গুল দিয়ে হলেও ঘষে নেওয়া।
তারপর কুলি করার জন্য বিসমিল্লাহ সহ কুলি করার দোয়া পড়বে-
- বিসমিল্লাহ সহ দোয়াটি এভাবে পড়া-
- “বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা আইন্নি আয়ালা তিলাওয়াতিল কোরআনি ওয়া জিকিরিকা ওয়া সুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা”
- বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, তুমি আমাকে সাহায্য করো যেন কুরআন তিলাওয়াত করতে, জিকির করতে ও শোকর আদায় করতে পারি।
- দুআ পড়ার পর কুলি করবে।কুলি করা সুন্নাত এবং তিনবার কুলি করা সুন্নাত।তিনবারের জন্য স্বতন্ত্রভাবে তিনবার পানি নেওয়া উত্তম।
- ডান হাতে পুলির পানি নিবে।
- রোজাদার না হলে গড়গড়া করা সুন্নাত।
- তারপর নাকে পানি দেওয়ার জন্য বিসমিল্লাহ সহ নাকে পানি দেয়ার দোআ পড়বে।
বিসমিল্লাহ সহ দোআটি এভাবে পড়া যায়-
উচ্চারন:আল্লাহুম্মা আরিহনী রায়িহাতাল জান্নাতি ওয়ালা তুরিহনী রায়িহাতান্নার
।
অর্থ :হে আল্লাহ,তুমি আমাকে জান্নাতের সুগন্ধি দান করো এবং জাহান্নামের
গন্ধ আমার ভাগ্যে দিও না।
- নাকে পানি দেওয়া সুন্নাত।
- ডান হাত দিয়ে নাকে পানি দেয়া এবং বাম হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলা আদব।
- রোজাদার না হলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি টেনে নেয়া উত্তম।
- বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলের অগ্রভাগ দিয়ে নাকের মধ্যে পরিষ্কার করা আদব।
- এরুপ তিনবার নাকে পানি দেয়া এবং ঝেড়ে ফেলা সুন্নাত।তিন বারের জন্য স্বতন্ত্রভাবে তিনবার পানি নেয়া উত্তম।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ মুখমন্ডল ধৌত করার দোআ পড়বে।
মুখমন্ডল ধৌত করার দোআ-
উচ্চারণ:আল্লাহুম্মা বাইয়্যিদ্ধ ওয়াজ্বহী ইয়াওমা তাবইয়াদ্দু উজুহূওঁ ওয়া
তাসওয়াদ্দু উছূহ।
অর্থ:হে আল্লাহ! যেদিন কতক লোকের চেহারা উজ্জ্বল এবং
কতক লোকের চেহারা মলিন হবে, সেদিন আমার চেহারাকে তুমি আলোকোজ্বল করিও।
- মুখমণ্ডল ধৌত করা ফরজ।কপালের উপরিভাগের চুলের গোড়া থেকে চিবুক অর্থাৎ থুতনি পর্যন্ত এবং চেহারার দুই পাশে দুই কানের লতি পর্যন্ত মুখমন্ডলের সীমানা।
- ডান হাতে পানি নিয়ে তার সঙ্গে বাম হাত মিলিয়ে কপালের উপরিভাগ থেকে ধোঁয়া আরম্ভ করা আদব।
- মুখে পানি আসতে লাগাবে। জোরে পানি মারা মাকরুহ।
- পাতলা দাড়ি হলে চামড়াতে পানি পৌঁছাতে হবে। আর ঘন দাড়ি হলে মুখের বেষ্টনীর ভিতরের দাড়ি ধৌত করতে হবে-চামড়াতে পানি পৌঁছানোর প্রয়োজন নেই। দাড়ির উপর থেকে নজর করলে যদি নিচের চামড়ার রং বোঝা যায় তাহলে চাপাতলা দাড়ি বলে গণ্য হবে, অন্যথায় ঘন দাড়ি বলে গণ্য হবে।
- চেহারার বেষ্টনীর বাইরের ঝুলন্ত দাঁড়িতে মাসেহ করা সুন্নাত।
- এরূপ তিনবার মুখমন্ডল ধৌত করা সুন্নাত।
- প্রতিবার পুরো মুখমন্ডলে ভালো করে হাত বুলাবে।
- ঘন দাড়ি খেলাল করা সুন্নাত। তিনবার মুখ ধৌত করার পর দাড়ি খেলাল করতে হবে।
- দাড়ি খেলাল কড়াই তরিকা হল এক কুষ পানি নিয়ে দাড়ির নিচের ভাগের থুতনিতে লাগাবে, তারপর খেয়াল করবে। ডান হাতে তালুর সামনের দিকে রেখে গলার দিক থেকে দাড়ির নিচ দিয়ে উপর দিকে খেলাল করা নিয়ম। খেলাল তিনবারের বেশি করা যাবে না।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ ডান হাত ধোয়ার দোআ পড়বে।
ডান হাত ধোয়ার দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা আয়তিনি’ই কিতাবী’ই বিয়ামিনি’ই হিসাবান
ইয়াসিরা”
অর্থ:হে আল্লাহ,আমার আমলনামা আমার ডান হাতে দিও এবং আমার
হিসাব-নিকাশ সহজ করো।
- ডান হাত কনুইসহ ধৌত করা ফরজ।
- আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে ধোয়া আরম্ভ করা সুন্নত।এবং হাতের অগ্রভাগ নিচু করবে যাতে ধরে ধোয়া পানি আঙ্গুলের অগ্রভাগ দিয়ে গড়িয়ে পড়ে।
- এভাবে তিনবার ধৌত করা সুন্নাত।
- প্রতিবাদ ধৌত করার সময় পুরো অঙ্গ ভালোভাবে মর্দন করবে।
- হাতে আংটি থাকলে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে ভিতরে পানি প্রবেশ করানো মুস্তাহাব।আর আংটি চাপা থাকলে অবশ্যই এরূপ করতে হবে।মহিলাদের নাকের অলংকার, চুরি ইত্যাদির বেলায়ও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
- বাম হাত ধৌত করার মাসআলাও ডান হাতের ন্যায়।এই তবে বাম হাত ধৌত করার দুআটি এই-
বাম হাত ধৌত করার দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাতুয়তিনীয় কিতাবীয় বিসিমালীয় ওয়ালা মিন ওয়ারায়ি জহরি”।অর্থ হে আল্লাহ, আমার আমলনামা দিও না আমার বাম হাতে, আর না পিছন দিক থেকে।
- বাম হাত তিনবার ধৌত করার পর হাতের আঙ্গুল খেলাল করবে,এটা সুন্নাত।
- আঙ্গুল খেলাল করার তরীকা হল-এক হাতের আঙ্গুলগুলো অন্য হাতের আঙুল সমূহের মধ্যে প্রবেশ করানো কিংবা বাম হাতের আঙ্গুলগুলো একসাথে ডান হাতের পিঠের দিক থেকে ডান হাতের আঙ্গুলগুলোতে প্রবেশ করানো। এমনিভাবে ডান হাতের আঙ্গুলগুলো দিয়ে বাম হাতের আঙ্গুল খেলাল করা।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ মাথা মাসেহ করার দোআ পড়বে।
মাথা মাসেহ করার দোআ-
- মাথা মাসেহের জন্য নতুন পানি নেয়া সুন্নাত।
- মাথা মাসেহ করা। পুরো মাথায় মাসেহ করা সুন্নাত। অন্তত মাথার চার ভাগের একভাগ মাসেহ করা ফরজ।
- মাথায় মাসেহ করার তরিকা-হল দুই হাতের পুরোতাল আঙ্গুলের পেট সহ মাথার অগ্রভাগে রেখে পুরো মাথা জুড়ে পেছনের দিকে টেনে আনবে। মাথার অগ্রভাগ থেকে মাসেহ শুরু করা সুন্নাত।
- উভয় হাত দ্বারা মাথা মাসেহ করা সুন্নাত। এক হাত দ্বারা মাসেহ করা সুন্নাতের খেলা খেলাফ।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ কান মাসেহের দোআ পড়বে।
উচ্চারণ-“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা আজিল্লানীয় তাহতা জিল্লি আরসিকা ইয়াওমা
লা জিল্লা ইল্লা জিল্লু আরসিকা”
অর্থ-, হে আল্লাহ, যেদিন তোমার আরশের ছায়া ছাড়া আর অন্য কোন ছায়া থাকবে
না, সেদিন তোমার আরশের ছায়া তলে আমাকে স্থান দিও।
কান মাসেহের দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মাজ আলনীয় মিনাল্লাজিনা ইয়াসতামীয়ুনাল ক্বাওলা কায়াত্বাবিয়ুনা আহসানাহু”।
আরো পড়ুন : যাকাত দেওয়ার নিয়ম এবং যাকাতের মাসায়েল যেনে নিন
অর্থ: হে আল্লাহ, যারা তোমার কথা শুনে মেনে চলে আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো।
- উভয় কান মাসেহ করা সুন্নাত।
- কান মাসেহ করার তরিকা হল-উভয় হাতের তর্জনী অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুল প্রথমে কানের ছিদ্রের প্রবেশ করাবে। তারপর সেই আঙ্গুলদ্বয় দ্বারা কানের ভিতরের দিক মাসেহ করবে। অতঃপর বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট দ্বারা কানের পিছনে ভাগ মাসেহ করবে।
- কান মাসেহের জন্য নতুন পানি নেয়ার দরকার নেই।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ গর্দান মাসেহের দোআ পড়বে।এটি মুস্তাহাব।
গর্দান মাসেহের দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা আ’তিক্ব রাক্বাবাতিয় মিনান্নার”।
অর্থ:
হে আল্লাহ,আমার ঘাড়কে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো।
- অতঃপর গর্দান মাসেহ করবে।
- উভয় হাতের আঙ্গুলের পিঠ দ্বারা গর্দান মাসেহ করবে।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ ডান পা ধোয়ার দোআ পড়বে।
ডান পা ধোয়ার দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহ আল্লাহুম্মা সাব্বিত্ কাদামায়য়া আয়ালাস্ সিরাতি ইয়াওমা তাযিল্লুল্ আক্ববামি”।অর্থ: হে আল্লাহ,যেদিন অনেক পা ফুলসিরাত থেকে পিছলে যাবে সেদিন আমার পদযুগল স্থির রেখো।
- প্রথমে ডান পা ধৌত করবে।পা ধৌত করা ফরজ।
- পায়ের অগ্রভাগে পানি ঢালা সুন্নাত।
- বাম হাত দিয়ে পা বিশেষভাবে পায়ের তলা মর্দন করা আদব।
- তিনবার ধৌত করা সুন্নাত।
- প্রতিবার পুরো অঙ্গ ভালো করে মর্দন করবে।
- ডান পা ধৌত করার পর ডান পায়ের আঙ্গুল খেলাল করবে।
- খেলাল করার তরিকা হল-বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা খেলাল করবে।
- ডান পায়ের কনিষ্ঠ আঙ্গুল থেকে খেলাল আরম্ভ করা নিয়ম।
- খেলাল করার সময় পায়ের আঙ্গুলের নিচের দিক থেকে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে খেলাল করবে।
- তারপর বিসমিল্লাহ সহ বাম পা ধোয়ার দুআ পড়বে।
বাম পা ধোয়ার দোআ-
উচ্চারণ:“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মায্ আল জানবীয় মাগফুরাউ ওয়াসায়য়ি মাসকুরাউ ওয়া তিযারাতীয়্ আন তাবুরা”।
আরো পড়ুন : স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব গুলো কি কি যেনে নিন
অর্থ:হে আল্লাহ,আমার গুনাহ মার্জনা কর,আমার চেষ্টাকে সাফল্যমন্ডিত কর এবং আমার আখিরাতের ব্যবসাকে ক্ষতির থেকে রক্ষা কর।
- তারপর ডান পায়ের ক্ষেত্রে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী বাম পা ধৌত করবে।শুধু বাম পায়ের আঙ্গুল খেলাল করার সময় বৃদ্ধ আঙ্গুল থেকে কনিষ্ঠ আঙ্গুলের দিক খেলাল করা নিয়ম।
যে সকল কাজ করলে উযু ভঙ্গ হয় বলে মনে হলেও বাস্তবে উযু ভঙ্গ হয় না।অর্থাৎ,এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো ঘটলে আমরা মনে করি উযু ভঙ্গ হয়ে গেছে।যেমন-
- বসে বসে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে উযু ভঙ্গ হয় না।
- নামাজের সেজদায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে উযু ভঙ্গ হয় না। তবে তন্দ্রায় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শিথিল হয়ে এক অঙ্গ অন্য অঙ্গের সাথে মিশে গেলে-যেমন: কোনই উরুর সাথে মিশে গেলে অথবা উরু ও পেটের সাথে মিশে গেলে-্উযু ভঙ্গ হয়। কিন্তু মেয়ে লোক এর ব্যতিক্রম।
- নামাজের মধ্যে মুচকি হাসি দিলে উযু ভঙ্গ হয় না
- উযু করার পর স্ত্রীলোক তার সন্তানকে দুধ পান করালে অথবা স্তন থেকে দুধ নিংরিয়ে ফেললেউ উযু ভঙ্গ হয় না।
- নিজের অথবা স্ত্রীলোকের যৌনাঙ্গে দৃষ্টিপাত করলে উযুু ভঙ্গ হয় না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ করা ভালো নয়।
- পুরুষ বা স্ত্রীলোকের শরীর স্পর্শ করলে অথবা চুম্বন করলে উযু ভঙ্গ হয় না।
- উ্রযু করার পর লজ্জাস্থানের হাত লাগালে উযু ভঙ্গ হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ করা মাকরুহ্।
- উযুুু করার পর নখ কাটলে অথবা হাতের চামড়া বা পায়ের চামড়া কাটলে, উপড়ালে উযু ভঙ্গ হয় না।
- উযু থাকা অবস্থায় বিড়ি সিগারেট সেবন করলে উযু ভঙ্গ হয় না।
- সতর খুললে উযু ভঙ্গ হয় না।
- কারোর সতর দেখলে উযু ভঙ্গ হয় না।
- মহিলাদের সামনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হলে উযু ভঙ্গ হয় না।
- অজু ভঙ্গের কারণ কি কি:
- অজু ভাঙ্গার কারণ সমূহ:
- পেশাব বা পায়খানা করলে।
- পায়খানার রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হলে।
- পেশাব বা পায়খানা ছাড়াও যদি অন্য কোন বস্তু, যেমন: কেঁচো, কৃমি, পাথর কণা বা অন্য যেকোন বস্তু পেশাব বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে বের হয় তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে।
- শরীরে যে কোন স্থান থেকে রক্ত, পোজ ইত্যাদি বেরিয়ে গড়িয়ে পড়লে।
- বমি করলে ওযু ভেঙে যায়। তবে বমি ছাড়াও রক্ত, পিত্ত, খাদ্য অথবা পানি মুখ ভরে নির্গত হলে ওজু ভেঙ্গে যায়।
- থুথুতে রক্তের পরিমাণ বেশি হলে ওযু ভেঙে যায়, এছাড়া মারি দিয়ে রক্ত বের হলে ওযু ভঙ্গ হবে। থুথুতে রক্তের পরিমাণ কম হলে কোন সমস্যা নেই, তবে যদি রক্তের পরিমাণ অধিক হয় অর্থাৎ রক্ত বন্ধ হওয়া না পর্যন্ত ওযু করা যাবে না।
- বীর্য, মযী অথবা হায়েযে রক্ত দেখা দিলে ওযু ভঙ্গ হয়। যা সাধারণত গোসলের অধ্যায়ে পরে। বীর্য ও মযী দুটি আলাদা বিষয়, সহবাসের সময় তৃপ্তি হওয়ার মুহূর্তে অথবা ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে যা নির্গত হয় তাকে বীর্য বলে। আর পুরুষ লিঙ্গের চটপটে ভাব দ্বারা স্ত্রী লোককে চুম্বন করলে অথবা স্ত্রী লোকের কাছাকাছি এল নতুবা কোন খারাপ চিন্তার বশবর্তী হলে লিঙ্গের অগ্রভাগ দিয়ে যে পানি বের হয় তাকে মযী বলে। বীর্য বের হলে গোসল ওয়াজিব হয় তবে মযী বের হলে গোসল আবশ্যক হয় না তবে ওযু ভেঙ্গে যায়।
- স্ত্রীলোকের স্তন থেকে দুধ ব্যতীত অন্য কোন বস্তু বের হলে ওযু ভেঙ্গে যায়।
- যোনি পথে আঙ্গুল প্রবেশ করালে ওযু ভেঙ্গে যায়।
- বেহুশ বা পাগল হলে ওযু ভেঙ্গে যায়।
- নামাজের মধ্যে উচ্চস্বরে হাসলে যদি পাশের লোক হাসির শব্দ শুনতে পায় তাহলে ওজু ভেঙ্গে যায়।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url