যেসব নারীকে বিয়ে করা হারাম

বিবাহ

মুসলিম আইনে যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ উক্ত বিবাহের নিষিদ্ধ পর্যায় গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে

১.তাহারিমুম্নসব বা রক্ত সংশ্লিষ্ট বাধা নিষেধ
২.তাহারিমুল মোসাহেরাত বা বিবাহ সংশ্লিষ্ট বাধা নিষেধ
৩.তাহারিমুর রাযা বা দুগ্ধ সংশ্লিষ্ট বাধা নিষেধ।

১)তাহারিমুম্নসব বা রক্ত সংশ্লিষ্ট বাধা নিষেধ

মুসলিম আইনে যাদের সাথে রক্তের সংশ্লিষ্ট কারণে বাধা নিষেধ সাপেক্ষে বিবাহ নিষিদ্ধ,তারা হলেন
ক. তার মাতাকে, মাতার মাতাকে, পিতার মাতাকে এবং উর্ধ্বগামী সবাই;
খ. তার কন্যাকে, কন্যার কন্যাকে, পুত্রের কন্যাকে বা এরূপ নিম্নগামী সকলকে;
গ. তার সহোদরা, বৈমাত্রেয় কিংবা বই বৈপিত্রেয় সকল ভগ্নী কিংবা তাদের কন্যা, কন্যার বা এরুপ নিম্নগামী সবাইকে
ঘ.তার ভাতুস্পত্রিকে,ভাগিনেয়ীকে কিংবা তাদের কন্যাদের বা এরূপ নিম্নগামী সবাইকে।

২)তাহারিমুল মোসাহেরাত বা বিবাহ সংশ্লিষ্ট বাধা নিষেধ

কোন মুসলমানের বিবাহ সৃষ্ট নিম্ন আরীয়গণকে বিবাহ নিষিদ্ধ
ক.তার শাশুড়ীকে, তার মাতা এরুপ উর্ধ্বগামী সকলকে
খ.তার স্ত্রীর কন্যা, তার কন্যা এরূপ নিম্নগামী সকলকে
গ.তার পুত্রের স্ত্রীকে, পুত্রের পুত্রের স্ত্রীকে এরূপ নিম্নগামী সকলকে।

৩)তাহারিমুর রাযা বা দুগ্ধ সংশ্লিষ্ট বাধা

মুসলিম আইনে কোন মুসলমান শিশু তার মাতা নয় এরূপ কোন বিবাহিতা স্ত্রী লোকের দুগ্ধ তার বয়স দুই বৎসর পূর্ণ হবার পূর্বে যে কোন সময় পান করে থাকে তাহলে উক্ত শিশুর সাথে উক্ত স্ত্রী লোকের দুগ্ধের সম্পর্ক স্থাপিত হয়।এই সম্পর্কের জন্য উক্ত শিশুর প্রতি তার নিজস্ব মাতা ও পিতার মত সম্পর্ক হয় বিধায় এই রূপ বিবাহ নিষিদ্ধ।

আরো পড়ুন : Mutation বা নামজারি খতিয়ান কি

মুসলিম নারীর অধিকার ও দায়-দায়িত্ব সমূহঃ-মুসলিম আইন অনুযায়ী একটি বৈধ বিবাহের ফলে স্বামী বা স্ত্রীর ক্ষেত্রে কিছু অধিকার ও দায়-দায়িত্বের সৃষ্টি হয়। এইগুলি নৈতিক এবং আইনগতও বটে।

১.এই রূপ বিবাহের ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর গৃহে বসবাসের, ভরণপোষণ লাভের এবং অবিলম্বে পরিশোধনীয় মওজুল এবং বিলম্বে পরিশোধনীয় মঅজিল উভয়প্রকার মোহরানা লাভের অধিকার হয়।
২.এ্রইরুপ বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর কাছ থেকে আনুগত্য বিশ্বস্ততা এবং শারীরিক কারণ ব্যাতিরেকে সকল অবস্থায় সহবাসের অধিকারপ্রাপ্ত হয়ে সন্তান জন্মের বৈধতা স্বীকৃত হয়।
৩.এইরূপ বিবাহের মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের সম্পত্তির অংশ পাওয়ার অধিকারপ্রাপ্ত হয়।
৪.বৈধ বিবাহের ফলে স্ত্রীর উপর স্বামীর কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়।
৫.স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকলে অন্যান্য স্ত্রীর সহিত স্বামী যেরূপ আচরণ করে, সংশ্লিষ্ট স্ত্রীও তেমন আচরণ পাওয়ার অধিকারী হয়। আবার রাত্রি যাপনের জন্য স্ত্রী পৃথক গৃহ দাবী করতে পারে।
৬.স্বামী স্ত্রীর মোহরানা না দিলে স্ত্রী স্বামীকে যৌন সঙ্গমে বাধা বা আপত্তি দেবার অধিকার রাখে।
৭.স্ত্রী বয়ঃসন্ধিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত স্বামী তার ওপর যৌন মিলনের আইনগত অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনা।
৮.স্ত্রী সামাজিক রীতি-নীতি ও প্রথা অনুযায়ী পর্দা সহ অন্যান্য কার্যাদি সহ দাম্পত্য জীবনের গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। বিশেষ করে সন্তান-সন্ততিকে দুধ পান করাবার জন্য স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করা যায় না।
৯.বৈধবিবাহ বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, কথোপকথন ইত্যাদি সাধারণ প্রকাশ থেকে বিরত রাখার জন্য আইনগত অধিকার জন্মে।
১০.এই রূপ বিবাহের ফলে উভয়ের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ অথবা স্বামীর মৃত্যু ঘটলে স্ত্রী অবশ্যই ইদ্দত পালন করতে হবে।
১১.বৈধ বিবাহের মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রীর উভয়ের মধ্যে স্থাপিত আইনানুগ চুক্তি সমূহ বাধ্যতামূলক হয়।

আরো পড়ুন : sa খতিয়ান কি?এস এ খতিয়ান ইতিহাস

সুতরাং যেহেতু মুসলিম বিবাহ একটি দেওয়ানি চুক্তি কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয় সে কারণে বিবাহের ফলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে উপর উল্লেখিত অধিকার ও দায়-দায়িত্বের সৃষ্টি হয় বা একজন নারীর অধিকার ও দায়-দায়িত্বের সৃষ্টি হয়।

লেখক এর মতামত

আমি (শামিম মোক্তার) শ্রীপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক শ্রীপুর,গাজিপুর।ইসলামিক আইন অনুযাই যেসব নারীকে বিয়ে করা হারাম এটা নিয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url