এস এ খতিয়ান ইতিহাস ও sa খতিয়ান কি?
আমরা ভিবিন্ন খতিয়ান সর্ম্পকে জানতে চাই sa খতিয়ান কি এবং এস এ খতিয়ান ইতিহাস,sa এর পূর্ণরূপ কি?sa জরিপ কতসালে শুরু হয় এবং sa জরিপ কেন করা হয়।আমি আপনাদের সাথে এস এ খতিয়ান ইতিহাস নিয়ে অলো চনা করবো।
অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান sa খতিয়ান কিভাবে তুলবেন এবং sa খতিয়ান এর জন্য কিভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন এবং এস এ খতিয়ান ইতিহাস বিস্তারিত জানতে এই পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পরুন।
পোস্টসূচীপত্র:এস এ খতিয়ান ইতিহাস ও sa খতিয়ান কি?
- এস এ খতিয়ান ইতিহাস
- এস. এ জরিপের বৈশিষ্ট্য সমূহ
- এস এ খতিয়ান কত সালে হয়
- খাস জমির সৃষ্টি
- এস,এ রেকর্ডের ত্রুটি বিচ্যুতি
- এস,এ পরবর্তী আর.এস জরিপ
- আর.এস জরিপ ভুক্ত এলাকার তথ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো
- বৃহত্তর ঢাকার সংশোধনী জরিপ(আর.এস)
- এস এ খতিয়ান অনলাইন
- এস এ খতিয়ান চেনার উপায়
- এস এ খতিয়ান কিভাবে তুলবেন?
- sa এর পূর্ণরূপ কি
- অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান
- লেখক এর মতামত
এস এ খতিয়ান ইতিহাস
১৯৫০ সনে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর ১৯৫৬ সনে সরকার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জমিদারি অধিগ্রহণ করে জমিদারে পরিবর্তে ভূমির মালিক হিসেবে রায়তের নাম খতিয়ান লিপিবদ্ধ শুরু করেন যা ১৯৬৩ সনে সমাপ্ত হয়।
আরো পড়ুন : ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ অনলাইনে মোবাইল দিয়ে করুন
এস. এ জরিপে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে নকশা সংশোধন ব্যতীত শুধু খতিয়ান সংশোধন করা হয়।জমিদারের নিকট হতে প্রাপ্ত কাগজপত্রের ভিত্তিতে ঘরে বসে এস. এ খতিয়ান প্রণয়ন করা হয়।তবে কিছু পৌর এলাকা সহ ঘনবসতি এলাকায় শুধু নতুন করে মৌজা নকশা প্রণয়ন করা হয়।
কিন্তু অধিকাংশ এলাকায় সাবেক নকশা বহাল রাখা হয়।তাছাড়া সংক্ষিপ্ত সময়ে সমগ্র দেশে এস,এ খতিয়ান প্রণয়নের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ জনবল সংকট থাকার দরুন,অদক্ষ জনবল ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার জন্য এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ ছিল।যার দরুন পরবর্তীতে ভূমি বিরোধ দেখা দেয়।
এস. এ খতিয়ান গুলো হস্তলিখিতরুপে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল।রেকর্ড রুম ও ভূমি অফিসে উপযুক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে এবং এস,এ খতিয়ানগুলি হস্তলিখিত ছিল বিধায় খতিয়ান গুলো বিভিন্নভাবে বিকৃত পাতাছেরা বা তথ্য গায়েব হওয়ার সুযোগ ছিল।
আরো পড়ুন : আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করে দাগের তথ্য দেখে নিন
রেকর্ড ম্যানুয়াল,১৯৪৩ মোতাবেক খতিয়ান রক্ষণাবেক্ষণের দায় দায়িত্ব কালেক্টর কর্তৃপক্ষের।কালেক্টরেট অফিস হতে প্রাপ্ত কাটাছেঁড়া, অস্পষ্ট, এস. এ খতিয়ান অনিবার্য কারণবশত ও নিরাপত্তা জনিত কারণে খতিয়ান নাম্বার অস্পষ্ট রাখা হয়েছিল।
এস. এ জরিপের বৈশিষ্ট্য সমূহ
জমিদার ও প্রজাগন সরকারের অধীনে চলে আসে।রায়গণের নাম খতিয়ান ভুক্ত হয়ে ভূমির মালিক দখলকার নিযুক্ত হন।জমিদারগণ মাত্র ৩৭৫ বিঘা সম্পত্তির মালিক হন এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি সরকারের খাস সম্পত্তিতে রেকর্ডভুক্ত হয়।এস.এ জরিপে খতিয়ানের মাত্র তিনটি কপি করে এক কপি জেলা রেকর্ডরুমে, এক কপি রাজস্ব সার্কেলে ও এক কপি তহশিল অফিসে প্রেরণ করা হয়।
এস এ খতিয়ান কত সালে হয়
নিচে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় এস এ জরিপ শুরু হয়।এস এ জরিপ শুরু সন তারিখ নিচে দেওয়া হল:
কার্যকরের তারিখ-জেলার নাম
- ১৩/০৫/১৯৫৮-বাকেরগঞ্জ(বর্তমান বরিশাল)
- ২৯/০৮/১৯৬৩-খুলনা
- ০৫/০৮/১৯৬৮-ফরিদপুর
- ০১/০৮/১৯৬৩-ঢাকা,-গ্রাম,বগুড়া,যশোর,রংপুর,ময়মনসিংহ,নোয়াখালী,পাবনা,রাজশাহীওসিলেট।
- ১০/০৫/১৯৬৩-কুমিল্লা
- ২৯/০৪/১৯৬৩-দিনাজপুর
বিঃদ্রঃ-এস. এ রেকর্ড কোথাও Modified Rent Roll (MRR) or Provisional Rent Roll (PRR) or Record of Rights (ROR) নামেও পরিচিত।
খাস জমির সৃষ্টি
১৯৫০ সনের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের বিধান মোতাবেক জমিদারগণের দখলীয় ৩৭৫ বিঘার অতিরিক্ত ভূমি সরকার সি. এ লের মাধ্যমে জমিদারদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার তা গ্রহণ করতেন।যেমন : কোন জমিদার ১০০০ বিঘা জমি দখলে নিয়োজিত ছিলেন।
আরো পড়ুন : বাড়ির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন করুন
এর মধ্যে(১০০০-৩৭৫)=৬২৫ বিঘা জমি খাস হয়ে যেত।তবে যেসব চাষাবাদের জমি চাষীগনের নিয়ন্ত্রণে ছিল তা রায়তের নামে খতিয়ান প্রস্তুত হয়।কিন্তু চাষাবাদ বহির্ভূত জমি এস. এ জরিপে সরকারের পক্ষে কালেক্টরের নামে খাস খতিয়ানভুক্ত হতো।এভাবে এস. এ জরিপে প্রচুর খাস জমির সৃষ্টি হয়।
এস,এ রেকর্ডের ত্রুটি বিচ্যুতি
- অনেক খতিয়ানে হিস্যা না লেখার কারণে ভূমি বিরোধের সূত্রপাত হয়।
- বৈধ ওয়ারিশের নাম বাদ পড়ে যায় আবার অনেক অবৈধ ওয়ারিশের নাম খতিয়ানে লিপিবদ্ধ হয়।
- অনেক প্রজার জমি ছুট খতিয়ানভুক্ত হয় ফলে ভূমির মোকদ্দমা বৃদ্ধি পায়।
- সরকারি খাস জমি প্রজার নামে রেকর্ড হয় যার ফলে খাজনা আদায় এবং জমি বিক্রয় এর ক্ষেত্রে জটিলতা বৃদ্ধি পায়।
- কোন কোন দাগ এর ভূমি সরকারী খাস খতিয়ান ও প্রজা খতিয়ানে দোকর বা দ্বৈত লিপিবদ্ধ হওয়ায় ভুমি বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
এস,এ পরবর্তী আর.এস জরিপ
এস. এ রেকর্ডে প্রচুর ভুল ভ্রান্তি থাকার কারণে সারাদেশে গণ-অসন্তোষ দেখা দেয়।সরকার বিষয়টি যাচাই করার জন্য ১৯৫৯ সালে মাহমুদ কমিশন এবং পরবর্তীতে ১৯৬২ সনে সৈয়দ মোয়াজ্জেম উদ্দিন হোসেন কমিশন গঠন করেন।সৈয়দ মোয়াজ্জেম উদ্দিন হোসেন কমিশন এবং সুপারিশ মোতাবেক ১৯৬৫-৬৬ সন হতে সংশোধনী জরিপ বা Rivisional Survey(RS) আরম্ভ করা হয়।
আর.এস জরিপ ভুক্ত এলাকার তথ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো
- এলাকার নাম--আরম্ভের বছর--এ পর্যন্ত অগ্রগতি
- বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চল--১৯৬৫-৬৬--১৯৮৩ সালে সমাপ্ত হয়েছে।
- বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চল--১৯৬৬-৬৭--২০০২ সালে সমাপ্ত হয়েছে।
- বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল--১৯৭০-৭১--১৯৯১ সালে সমাপ্ত হয়েছে।
- বৃহত্তর পাবনা অঞ্চল--১৯৭৫-৭৬--২০০৫ সালে সমাপ্ত হয়েছে।
- বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চল--১৯৭৫-৭৬--১৯৯৫ সালে সমাপ্ত হয়েছে।
- বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল--১৯৭৯-৮০--বর্তমানেও চলমান রয়েছে।
বৃহত্তর ঢাকার সংশোধনী জরিপ(আর.এস)
বৃহত্তর ঢাকা জেলার সংশোধনী জরিপ কাজ ১৯৬৬-৬৭ অর্থ বছরে আরম্ভ করা হয়।সূচনা পূর্বে সংশোধনী জরিপের আওতায় ঢাকা জেলার অধীন তোদানিম্ড়্ন ০৬ টি (ঢাকা সদর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ,নরসিংদী, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ) মহাকুমার মোট ৪৭ টি থানার ৫২৫১ টি মৌজার ভূমি জরিপের
আরো পড়ুন : খতিয়ান চেনার উপায় cs খতিয়ান কি?
সার্বিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।পরবর্তীতে সিকস্তিজনিত কারণে জরিপ অনুপযুক্ত হওয়ায় ঢাকা জেলার সদর মহকুমার দোহার থানার ০৩ টি, নারায়ণগঞ্জ মহকুমার বৈদ্যেরবাজার থানার ১৩ টি,আড়াইহাজার থানার ০৫ টি,মানিকগঞ্জ মহকুমার হরিরামপুর থানার ২৭টি, দৌলতপুর থানার ০৪টি,
শিবালয় থানার ০৯টি,মুন্সিগঞ্জ মহাকুমার লৌহজং থানার ১০টি, সিরাজদিখান থানার ০১টি,টঙ্গীবাড়ী থানার ০৮টি,শ্রীনগর থানার ০৭টি, সদর থানার ০১টি,গজারিয়া থানার ০৫টি সহ মোট ৯৩ টি মৌজার কাজ সার্বিক কর্মসূচি হতে বাদ রাখা হয়।ফলে মোট কর্মসূচি ভুক্ত মৌজা সংখ্যা দাঁড়ায় ৫১৫৮টি।
এ জরিপে মোট ০৬টি জেলার ৪৭ টি থানার ৫১৫৮টি মৌজার ৫৪,৭২,৪৯২ টি দাগ, ১৬,২৩,১৯৩টি খতিয়ান ও ৭,৮৪৪ সিট প্রস্তুত করা হয়।৩০ বিধিতে নিষ্পত্তিকৃত আপত্তি কেস সংখ্যা ৪,৭৬,৪৭৭ টি এবং ৩১ বিধিতে নিষ্পত্তিকৃত আপিল কেস সংখ্যা ছিল ৩৫,৭৬৯টি।
আরো পড়ুন : হেবা দলিল খরচ কত যেনে নিন
গেজেট বিজ্ঞপ্তি নং-ভূঃমঃশা/২/গেঃবিঃ/৩/২০০১/৭৪১/১(৩),তারিখ ১০-১০-২০০২ ইং জারির পর ২০০২ সালের ২৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৭টি মজার ভলিউম হস্তান্তরের মাধ্যমে এই সংশোধনী জরিপ সমাপ্তি লাভ করে। লক্ষ্যণীয় যে,আর.এস জরিপও যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করা যায়নি।ফলে ভুমি মালিকেরা কাঙ্খিত সুফল পাইনি।
এস এ খতিয়ান অনলাইন
এখন সব ধরনের খতিয়ান অনলাইনে পাওয়া যায় যেসব এলাকায় আপনার অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত হইছে খতিয়ান গুলো আপনার অনলাইনে দেখতে পারবেন।খতিয়ান গুলো দেখার জন্য প্রথমে বিভাগ নির্বাচন করতে
আরো পড়ুন : সাব কবলা দলিল এর রেজিস্ট্রেশন খরচ কত যেনে
হবে,জেলা নির্বাচন করতে হবে,উপজেলা নির্বাচন করতে হবে,মৌজা নির্বাচন করতে হবে,জেল নং নির্বাচন করতে হবে,আপনার এলাকায় যদি অনলাইনে হয়ে থাকে তাহলে আপনি খতিয়ানটি অনলাইনে দেখতে পারবেন।
এস এ খতিয়ান চেনার উপায়
এস.এ খতিয়ানটি আড়াআড়ি ভাবে থাকে,এ খতিয়ানটিতে অংশ দেওয়া থাকে না,এ খতিয়ানে এক বা একাধিক মালিকের নাম থাকতে পারে,সাবেক সি.এস খতিয়ান নাম্বার দেয়া থাকবে এবং হালসে খতিয়ান নাম্বার দেওয়া থাকবে খতিয়ানের বাম সাইডে উপরের কর্নারে।বর্তমান সময়ে এক খতিয়ানটি কম্পপিউটার প্রিন্টে দেওয়া হয় কম্পপিউটার পিন্টটে খতিয়ানটি লম্বালম্বি ভাবে থাকে।
এস এ খতিয়ানের নমুনা
এস এ খতিয়ান কিভাবে তুলবেন?
খতিয়ান তুলতে চাইলে আপনাদেরকে জেলা রেকর্ড রুমে আবেদন করতে হবে খতিয়ান তোলার জন্য।২০ টাকা কোর্ড ফ্রি দিয়ে ফরম পূরণ করে জেলা রেকর্ড রুমে খতিয়ানের জন্য আবেদন করবেন।দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আপনি আপনার আবেদনকৃত খতিয়ানটি পেয়ে যাবেন।আপনি চাইলে অনলাইনেও খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারেন যা পরবর্তী সময়ে ডাকযোগে আপনি পাবেন সেই ক্ষেত্রে সময় লাগবে ৭ দিন।
sa এর পূর্ণরূপ কি
s.a খতিয়ান তৈরি করা হয় cs এর পরে।এস. এ খতিয়ানে ভুল থাকার কারনে পরবর্তী সময় আর.এস জরিপ হয়।sa এর পূর্ণরূপ হচ্ছে (State Acquisition Survey)।
অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান
আপনারা যদি অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করতে চান বা অনলা্নে জমির খতিয়ান/পর্চা তুলতে চান তুলতে পারবেন।অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান আপনাদের কে প্রথমেঅোপনি যে খতিয়াটি চান তার জন্য আবেদন করতে হবে।অনলাইনে আবেদনের জন্য আপনার ID Card লাগবে।আপনি যে ঠিকানা দিবেন সে ঠিকানাই পর্চা বা খতিয়ান পাঠিয়ে দিবে।
লেখক এর মতামত
আমি(শামিম মোক্তার)শ্রীপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক শ্রীপুর,গাজিপুর।এস এ খতিয়ান ইতিহাস এবং sa খতিয়ান কি এই নিয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
১৯৫৬ সালে দলিল হলে সেটা রেকর্ডভুক্ত হবে না? জেলাঃ বরগুনা।
বুজ লাম না আপনার প্রশ্ন
১৯৪০সালের আগে দলিল হলে তা কি হবে