খতিয়ান চেনার উপায়।।cs খতিয়ান কি?
খতিয়ান চেনার উপায় যেনে নিন আমরা অনেকেই জানি না খতিয়ান কি?ভিবিন্ন খতিয়ান কিভাবে চেনা যাই এবং অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান কি ভাবে করবো আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো cs খতিয়ান নিয়ে,cs খতিয়ান কি এবং cs খতিয়ান কিভাবে চিনবেন।
অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান কিভাবে করবেন,cs খতিয়ান এর জন্য অনলাইনে কিভাবে আবেদন করবেন এবং খতিয়ান চেনার উপায় গুলো জানতে পারবেন এই পোষ্টটি থেকে,এই পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পরলে ১০০% খতিয়ান সর্ম্পকে ধারনা পাবেন।
পোস্টসূচীপত্র:খতিয়ান চেনার উপায় cs খতিয়ান কি?
ভূমি জরিপের ইতিহাস
সম্রাট শেরশাহের আমলে(১৫৪০-১৫৪৫)প্রথম ভূমি জরিপ চালু হয়েছিল।পরবর্তীতে(১৫৮২-১৫৮৭) সনে সম্রাট আকবরের অর্থমন্ত্রী টোডরমল আরেকটি ভূমি জরিপ পরিচালনা শুরু করেন।যদিও এগুলি পরিপূর্ণ ভূমি জরিপ ছিল না তবুও তা ভূমি জরিপের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুন : ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ অনলাইনে মোবাইল দিয়ে করুন
১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালুর ফলে ভূমির মালিকানা ও দখলিস্বত্বের উপর ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।কিন্তু সীমানা চিহ্নিত না থাকার কারণে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়।১৮৪৬-১৮৭১ সনের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে থাকবাস্তু সার্ভে করা হয়।
থাক সার্ভে সম্পূর্ণ নিষ্কণ্টন না থাকার দরুন পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮৪৭-১৮৭৮ সনের মধ্যে রাজস্ব জরিপ পরিচালিত হয়।এটাই প্রথম বৈজ্ঞানিক জরিপ যাতে আমিনগণ সরেজমিনে ৪ ইঞ্চি = একমাইল স্কেলে কাজ পরিচালনা করেন এখঅনে ভূমি জরিপের ইতিহাস সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হল।
সি এস খতিয়ান কি?
ক্যান্ডাষ্ট্রাল সার্ভে বলতে সরেজমিনে প্রতিটি ভূমি খন্ড জরিপ করে এর আয়তন,পরিমাণ ও সীমানাসহ বিবিদ স্থায়ী আলামত সহ মৌজার নকশা প্রস্তুত,দখল ও মালিকানার তথ্যাদি সম্বলিত খতিয়ান প্রস্তুতকে বোঝায়।প্রতিটি ভূখণ্ডের দাগ ও খতিয়ান প্রণয়ন করার স্বার্থে ব্রিটিশ সরকার
আরো পড়ুন : আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করে দাগের তথ্য দেখে নিন
১৮৭৫ সনে সার্ভে আইন প্রণয়ন করেন।তারপর,ব্যবস্থাপনা ও স্বত্ব নির্ধারণে ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন পাশ করা হয়। বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ১০১(১) ধারার বিধান মতে সিলেট জেলা ও পার্বত্য জেলা সমূহ ব্যতীত ১৮৮৮ সনে কক্সবাজার জেলার রামু থানায় পরীক্ষা মূলক ভাবে সর্বপ্রথম কিস্তোয়ার জরিপ ও খতিয়ান প্রস্তুত এর কাজ শুরু হয় এবং সফলভাবে সমাপ্ত হয়।
এই সফলতার উপর ভিত্তি করে ১৮৯০ সনে চট্টগ্রামড জেলায় ক্যান্ডাষ্ট্রাল সার্ভে সি. এস আরম্ভ হয় না ১৮৯৮ সনে সমাপ্ত হয়।এভাবে পালাক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলায় জরিপ কার্যক্রম শুরু হয় যা ১৯৪০ সনে দিনাজপুর জেলায় জরিপ কার্যক্রম দিয়ে সমাপ্ত হয়।
সি. এস জরিপে নকশা প্রস্তুত কালে আমিনগণ সরেজমিনে প্রতিটি প্লট পরিদর্শনপূর্বক নকশা অংকন করেন যা আজও ভূমির ক্ষেত্রে এর গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম।এটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সঠিক ও নির্ভুলভাবে প্রস্তুত করা হয় বিধায় ভুমির মাপঝোক সীমানা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বেশি নির্ভরযোগ্য।
আরো পড়ুন : বাড়ির দলিল দিয়ে ব্যাংক লোন করুন
সি.এস জরিপের দ্বারা প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে একত্রে জমিদারের নাম,প্রতিনিধির নাম ও রায়তের নাম লেখা হয়।সি.এস জরিপ সমাপ্তির পরে জমিদারদের স্বার্থে তাদের আবেদন মোতাবেক কোন কোন এলাকার নকশা ও খতিয়ান প্রণয়নের জন্য সরকারি আইনে সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট এর বিধান রাখা হয়েছিল।এ প্রকারের জরিপকে কোন এলাকায় ডি. এস.(D.S) বা ডিস্ট্রিক্ট সেটেলমেন্ট বলা হয়।
সি এস খতিয়ান কত সালে হয়
নিচে সিএস খতিয়ান কত সাল থেকে শুরু হয় বাংলাদেশে ভিবিন্ন জেলাতে তার একটি সময় কাল দেওয়া হল এবং জেরার নাম দেওয়া হল:
জেলার নাম-জরিপের সময়কাল:
- ময়মনসিংহ-১৯০৮-১৯১৯ সন
- ঢাকা -১৯১০-১৯১৭ সন
- রাজশাহী -১৯১২-১৯২২ সন
- নোয়াখালী -১৯১৪-১৯১৯ সন
- কুমিল্লা -১৯১৫--১৯১৯ সন
- কুষ্টিয়া -১৯১৮-১৯২৬ সন
- যশোর -১৯২০-১৯২৪ সন
- বগুড়া -১৯২০-১৯২৯ সন
- পাবনা -১৯২০-১৯২৯ সন
- চট্টগ্রাম -১৮৮৮-১৮৯৮ সন
- রংপুর -১৯৩১-১৯৩৮ সন
- দিনাজপুর -১৯৩৪-১৯৪০ সন
- ফরিদপুর -১৯০৪-১৯১৪ সন
- বরিশাল -১৯০৪-১০১৬সন
- সিলেট -১৯৫০-১৯৬৪সন
- খুলনা -১৯২০-১৯২৬সন
এস.এ জরিপের পূর্বে সংশোধনী জরিপ বা আর.এস জরিপ
সি. এস জরিপ শেষ হওয়ার পর ১৯৪০ সনে বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল জেলায় আর.এস জরিপের কার্যক্রম শুরু হয়।তারপর ১৯৪৫ সনে ফরিদপুর,১৯৫২ সনে বরিশাল জেলায় সংশোধনী জরিপ(Revitional Survey) বা আর. এস জরিপের কাজ সমাপ্ত হয় এবং খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।
সি এস খতিয়ান বের করার নিয়ম
সিএস খতিয়ান আপনারা যদি সিএস খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি তুলতে চান আপনাদেরকে যেতে হবে জেলা রেকর্ড রুম।জেলার রেকর্ড রুম থেকে ২০ টাকার কোড ফ্রি দিয়ে খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে হবে।তারপর আপনার দুই থেকে তিন দিন সময় নিবে আপনি খতিয়ানটা নিয়ে আসতে পারবেন।
আরো পড়ুন : পুরাতন দলিল এর লেখা বোঝার উপায় যেনে নিন
আপনি যদি চান অনলাইনে খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারেন।এ ওয়েবসাইটটি থেকে আপনারা খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারেন।সেটা আপনার যে কোন খতিয়ান হোক না কেন।আবেদন করার ৭ দিনের মধ্যে ডাকযোগে আপনি খতিয়ানটি হাতে পাবেন এবং আবেদনের পেমেন্টটি আপনি অনলাইনে পেমেন্ট করে দিবেন।
সি এস খতিয়ান নমুনা
সি এস খতিয়ান Front Side এর নমুনা আপনাদের বোজানোর জন্য দেওয়া হল।সি এস খতিয়ানের ফন্ট সাইটে আপনারা জমি দারদের নাম এবং প্রজার নাম পাবেন।
CS খতিয়ান front side:
CS খতিয়ান Back side:
সি এস খতিয়ান অনলাইন
সি এস খতিয়ান আপনারা চাইলে অনলাইনে চেক করতে পারবেন।অনলাইনে চেক করার জন্য আপনার যে বিভাগে আছেন প্রথমে সেই বিভাগ নির্বাচন করতে হবে,আপনার উপজেলা নির্বাচন করতে হবে,জেলা নির্বাচন করতে হবে
আরো পড়ুন : নাম দিয়ে জমির দলিল অনুসন্ধান করুন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে
মৌজা নির্বাচন করতে হবে,জেল নং নির্বাচন করতে হবে,আপনার খতিয়ান নাম্বার দিতে হবে,এখনো অনলাইনে সব জায়গায় কভার হয় নাই তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে সিএস খতিয়ান নাও দেখা যেতে পারে পারে অনলাইনে।অতি শীগ্রই এটা অনলাইনে হয়ে যাবে।
সি এস খতিয়ানের হিস্যা
সি.এস খতিয়ান এর হিস্যা এবং আর.এস খতিয়ানের হিস্যা একই রকম দেখতে।সি.এস খতিয়ান থেকে যেভাবে হিস্যা বের করতে হয় আর.এস খতিয়ান থেকেও একইভাবে হিস্যা বের করতে হয়।হিস্যা হচ্ছে জমির অংশ আপনার কার নামে কতটুকু জমিয় রেকর্ড হয়েছে
এটা আপনার খতিয়ানে দেওয়া থাকে এটা থেকে আপনার বের করতে হয় কার নামে কতটুকু জমি আপনার রেকর্ড আছে এবং কে কতটুকু অংশের মালিক এটা সি.এস খতিয়ান থেকে আপনার যেভাবে বের করতে হয় আর.এস খতিয়ান থেকে আপনার একইভাবে এটা বের করতে হয়।
সি এস খতিয়ান কিভাবে চিনবেন?
খতিয়ান চেনার উপায় সি.এস খতিয়ানের প্রথম পেজে সবার প্রথমে আপনার জমিদারদের নাম থাকবে।তারপর আপনার নিচে প্রজাদের নাম থাকবে,এখানে আপনার যারা জমিদারের কাছ থেকে জমি পেয়েছে নিচে আপনার তাদের নাম থাকবে পাশে থাকবে আপনার অংশ কে কতটুকু অংশের মালিক।অপর পৃষ্ঠায় থাকবে আপনার দাগ নাম্বার, জমির পরিমাণ, উত্তর সীমানা্ শুধুমাত্র সিএস খতিয়ানেই পাবেন।
অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান
c.s,sa,rs,b.s খতিয়ান আপনি অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করতে পারবেন।আপনি চাইলে অনলাইনে খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।আপনার ID Catd নাম ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে যে কোন পর্চা/খতিয়ানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।অনলাইনে খতিয়ানের জন্য আবেদন করার পরে ডাক যোগে আপনাদেরকে খতিয়ান পাঠানো হবে।
লেখক এর মতামত
আমি(শামিম মোক্তার)শ্রীপুর সাব-রেঝিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক শ্রীপুর,গাজিপুর।খতিয়ান চেনার উপায় cs খতিয়ান কি?সি এস খতিয়ান চেনার উপায় এটা নিয়ে যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
খতিয়ান উঠাতে কত টাকা খরচ হয়